স্বদেশ ডেস্খ:
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে পরাজিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দায়ের করা আরেকটি মামলা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এবার পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে আরেকটি আদালতে ট্রাম্পের মামলা খারিজ হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল বাতিল চেয়ে আদালতে মামলা করেছিলেন। পেনসিলভানিয়া ফেডারেল আদালত ভোটের ফলাফল প্রত্যয়ন করার ওপর আস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করে ২৭ নভেম্বর মামলার শুনানি ঠিক করেছিলেন। অবশ্য এর আগেই রাজ্যের ভোটের ফলাফল প্রত্যয়ন হয়ে গেছে।
২৭ নভেম্বর আদালতের রায়ে বিচারক স্টিফেনোস বিবাস বলেছেন, এ মামলায় সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ এবং প্রমাণ নেই। মামলা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা এ নিয়ে আপিল আদালতে যাবেন। সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে ট্রাম্প আইনজীবীদের নিষ্ফল যাত্রা অব্যাহত রয়েছে।
ট্রাম্পের আইনজীবী দলের অন্যতম জেনা এলিস এক টুইটবার্তায় বলেন, পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বিচার বিভাগ রাজনৈতিক কারণে রাজ্যের ব্যাপক ভোট জালিয়াতি আড়াল করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে এখন বিষয়টি প্রমাণের জন্য তারা সুযোগ পাবেন বলে এমন রায়কে ধন্যবাদ জানান জেনা এলিস।
এখন এ মামলার খারিজ হওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আপিল করতে ট্রাম্পের আইনজীবীরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন। রাজ্যের এমন আপিল আবেদন বিচারপতি সামুয়েল এলটোর কাছে যাবে। বিচারপতি এলিটো তখন তার অন্য আট বিচারপতি নিয়ে শুনানি গ্রহণ করবেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আশা করছেন, সুপ্রিম কোর্টের নয় বিচারপতির মধ্যে তাঁর ঘরানার সংখ্যাগরিষ্ঠতা এখন রয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শে অসম বিভক্ত সুপ্রিম কোর্ট থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্য বা অন্য কোনো অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলাফল পাল্টে ফেলার কোনো আদেশ নিয়ে আসতে পারবেন-এমন মনে করেন না কোনো আইন বিশ্লেষকও।
২৬ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাংবাদিকদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার সময় ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউস ছাড়ার ইঙ্গিত দেন। প্রথমবারের মতো বলেন, ইলেক্টোরাল কলেজ ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে তিনি হোয়াইট হাউস থেকে চলে যাবেন। নির্বাচনে পরাজয় স্বীকার করা তাঁর জন্য কঠিন এবং কোনো প্রমাণ ছাড়াই তিনি আবারও নির্বাচনে ভোট কারচুপি ও জালিয়াতি হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। নতুন প্রেসিডেন্টের অভিষেক অনুষ্ঠানে তিনি উপস্থিত থাকবেন কি না, এ নিয়ে কিছু বলেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
গতকাল শুক্রবার দেওয়া ফেসবুক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বাইডেন হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট হিসেবে কেবল তখনই ঢুকতে পারবেন, যখন তিনি প্রমাণ করতে পারবেন, জালিয়াতি বা অবৈধভাবে নয়, প্রকৃতভাবেই আট কোটি ভোট পেয়েছেন। জো বাইডেনের আট কোটি ভোট পাওয়াকে ট্রাম্প হাস্যকর বলেও উল্লেখ করেছেন।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার টুইটার অ্যাকাউন্টে একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে সিংহের সঙ্গে হিংস্র হায়নাদের লড়াই দেখা যাচ্ছে। ‘পুলহাল জাঙ্কিস’ সিনেমার অভিনেতা ক্রিস্টোফার ওয়াকেনের সংলাপ-এত বেশি সত্য!
আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি জানিয়েছেন, পেনসিলভানিয়া ছাড়াও মিশিগান, নাভাদা, অ্যারিজোনা ও জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের ভোটে অনিয়ম নিয়ে একইভাবে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত রাজ্য পর্যায়ের আদালতে, এমনকি সার্কিট কোর্টেও ভোট জালিয়াতি বা কারচুপির কোনো কার্যকর প্রমাণ ট্রাম্প শিবির উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে।